বই সংক্ষেপ: সময়ের প্রবল ঝঞ্ঝা উপেক্ষা করে কীভাবে প্রবল বিশ্বাসে দোদুল্যমান তরীর দাঁড় বাইতে হয়, উমাইয়া খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজ ছিলেন তাঁর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। উমাইয়া রাজবংশের প্রতাপে মানুষ যখন ভুলতে বসেছিল খোলাফায়ে রাশেদার স্বর্ণকাল, তিনি এসে এক ঝটকায় আবার সকলের স্মরণে সেই স্মৃতি জাগরুক করে তোলেন। ইতিহাসে তাই তাঁর নাম লেখা আছে অমর হয়ে।
উমর ইবনে আবদুল আজিজ আমাদের চেতনার এক অত্যুজ্জ্বল মশাল। তাঁর জীবন আমাদের এ শিক্ষা দেয় যে, সৎশাসন এবং সত্যের পতাকা নির্ভয়ে ঊর্ধ্বে তুলে ধরা মুসলিমদের জন্য প্রত্যেক যুগেই এক আবশ্যিক কর্তব্য। কর্তব্য পালনের পথে শাসকের রক্তচক্ষু কিংবা সময়ের দুর্বিপাক যত তীব্রই হোক, তা উপেক্ষা করে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি উমাইয়া খেলাফতকে নববি ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন এবং সফলও হয়েছিলেন। কিন্তু ভোগবাদে মত্ত উমাইয়া বংশের উচ্চাভিলাষী কুচক্রী মহল তাঁকে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে দেয়নি। বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয় তাঁকে। এরপর সবকিছু আবার আগের মতো চলতে থাকে।
ওয়ালিদের পরে তাঁর আপন ভাই সুলাইমান ইবনে আবদুল মালিক খেলাফতের দায়িত্বে আসেন। উমর ইবনে আবদুল আজিজ তাঁর রাজদরবারের উপদেষ্টা ছিলেন। সুলাইমানের পর তাঁর কোনো উপযুক্ত পুত্র না থাকায় তিনি ওসিয়ত লিখে উমর ইবনে আবদুল আজিজকে পরবর্তী খলিফা মনোনীত করে যান। উমর ইবনে আজিজ খলিফা হওয়ার পর মুসলিম খেলাফতে সংস্কারের ঝড় বয়ে যায়। খোলাফায়ে রাশেদিনের যুগে ফিরতে শুরু করে খেলাফত। এখান থেকেই বক্ষ্যমাণ গ্রন্থের সূচনা।
এ মহান খলিফার জীবন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের অতীত গৌরব এবং খেলাফতের প্রাণশক্তির আবশ্যিকতা। লেখক আব্দুল্লাহ আল মাসূম দীর্ঘ অধ্যয়ন ও গবেষণার পর রচনা করেছেন বইটি। তুলে এনেছেন ইতিহাসের অবশ্যপাঠ্য এক সত্য ইতিহাস।